Outliers

পেনেসিলভানিয়ার এক পাহাড়ের নীচে ছোট এক শহর। শহরের নাম রোজেটো । ১৯৫০ এর দিকে রজেটো ছিলো একটা ছোট গ্রামের মতো শহর ।
বাসিন্দারা সব উত্তর ইটালী থেকে আসা ইমিগ্রেন্ট  ঘটনাক্রমে এক বিচিত্র একটা প্যাটার্ন লক্ষ করা যায় রজেটোতে  এই শহরের মৃত্যু হার গোটা আমেরিকার ৩০-৩৫% কম !!
১৯৫০ এর দিকে হার্ট এ্যাটাককে মহামারী মনে করা হতো । ৬৫ এর নিচে পুরুষের মৃত্যুর হার সবচে বেশী তখন হার্ট এ্যাটাকে ছিলো আমেরিকাতে। সেখানে রজেটো তে ৫৫ এর নিচে কারোই হৃদরোগ ছিলো না । তো যেই ডাক্তার এটা লক্ষ করলেন তিনি এর পিছে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন ।
প্রথমেই তিনি দেখলেন তাদের খাদ্যাভাস
-- তারা ওল্ড ওয়ার্ল্ড থেকে কিছু ভেষজ বা ফর্মূলা নিয়ে এসেছিলো কিনা ।
ঘটনা ক্রমে ১৮০০ শতকের শেষের দিক থেকে ইটালীর পুরোনো ছোট গ্রাম রজেটো থেকে সব অধিবাসীরা নতুন রজেটোতে এসেছিলো ,কারন তারা ছিলো খুব গরীব। পুরনো রজেটোও ছিলো একটা পাহাড়ের নিচে
-- নতুন শহরটা তারা তৈরী করেছিলো পুরোনো রজেটোর আদলে । সেই ডাক্তার খুজে পেতে দেখলেন
-- ইটালীতে তারা হেলথী জলপাই তেলে রান্না করে খেতো
-- যেখানে নতুন রজেটোতে লার্ড দিয়ে রান্না করে , আর খাদ্যভাসেও গড়পড়তা আমেরিকানদের তুলনায় কোন হের ফের নেই ।
পরে তিনি ভাবলেন
-- হয়তো পরিবেশের কারনে
-- ছোট পাহাড় তার সুস্থ আবহাওয়ার কারনে
-- তিনি এই পাহাড়ের আশেপাশে আরো সেটলম্যান্ট দেখলেন
-- ইউরোপের অধিবাসী দিয়ে পূর্ণ দুটা শহর । কিন্তু না
-- সেখানেও কিছু মিল্লো না
-- ঐ দু শহরের মৃত্যু হার রজেটোর ৩ গুন ।
তিনি পুরোনো রজেটোরিয়ানদের মধ্যে যারা পেনেসিলভানিয়ার বাসিন্দা না কিন্তু আমেরিকাতে থাকে তাদের খুজে বের করলেন । তারাও কি এত চমৎকার স্বাস্থ্যের অধিকারী ?
-- না ।
সেই ডাক্তার দারুন কিছু খুজে বের করার আসায় তার ছাত্র আর কলিগ নিয়ে পুরো রজেটোর পূর্নবয়স্ক মানুষদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে সব রেকর্ড করেছেন । এদের মধ্যে অবিসিটিতে আক্রান্ত মানুষ গড়পরতা আমেরিকার মতোই ।
সবকিছু দেখার পর তিনি সিদ্ধান্তে আসলেন
-- রজেটোর অধিবাসীদের কোন গুপ্ত মন্ত্র নেই । এরা কোন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মরে না
-- এরা বুড়ো হয় তারপর স্বাভাবিক ভাবে মারা যায় । এদের এই চমৎকার স্বাস্থ্যের পিছনে রয়েছে
-- রজেটো শহরটা নিজেই । রজেটেরিয়ানরা একই ছাদের নিচে তিন পুরুষ ধরে থাকে । রাস্তায় দেখা হলে তারা নিজের সাথে গল্প করে অনেকখন । বাড়ীর সামনের রোয়াকে বসে আড্ডা দেয় । এই ডাক্তারে উপলব্ধি হৃদরোগের মোকাবেলায় নতুন করে ভাবাতে সাহায্য করেছে মেডিক্যাল সোসাইটি কে । এত দিন পর্যন্ত আমরা কতটুকু ব্যায়াম করবো, কি খাবো , পুর্বপুরুষের জীন এই সব নিয়ে চিন্তা করতাম । সামাজিক সম্পর্ক আমাদের স্বাস্থ্য কি ভূমিকা রাখে --সেটা নিয়ে কেউ চিন্তা করেনি । সামাজিক সম্পর্ক হাসি-ঠাট্টা আড্ডা দারুন সুস্থ রাখে আমাদের ।

এই রজেটোই হলো আউটলায়ার ।

Comments

Popular posts from this blog

Link3 FTP Server

কেন গবেষণা করব?

Arduino Adventures by Floyd Kelly James and Harold Timmis