দরিদ্র বাংলাদেশ

বাংলাদের একটি দরিদ্র দেশ। হ্যা আমি জানি বাংলাদের একটি উন্নয়নশীল, মধ্যবিত্ত আয়ের দেশ। অন্তত দরিদ্র নয়। কিন্তু আমি যে দরিদ্র বললাম তার একটি কারণ আছে। এবার বলছি কারণটি......
আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা A+ ভিত্তিক। বাচ্চা স্কুলে ভর্তি হবার সময় থেকেই শুরু হয় প্রতিযোগিতার পালা। ভর্তি হবার ৬ বছরের মাথায় তাকে দিতে হয় জীবন তৈরি করার মহৎ পরীক্ষা, যাতে A+ পেয়েই জীবনের প্রথম ধাপ এগোনো। এর পর তো আছে jsc, ssc, hsc। এখানেও রয়েছে A+, যা না পেলে সে ছাত্র হিসেবে গন্য নয় বা তার দ্বারা ভবিষ্যতে কিছু হবে বলে কেউ খুব একটা আশা করে না। আমাদের দেশের স্কুলগুলো এই A+ পাওয়া নিয়ে প্রতিযোগিতায় নামে। আর এক এক জন কিভাবে A+ এর ভিতরে অন্যতম হবে তার চিন্তা করেই জীবন শেষ।
ক্লাসে যদি বলা হয় কে কি হবে তাহলে হাত বেশি উঠবে ডক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক...... এখানেও শিক্ষক এর একটি কোটা রয়েছে। তা হল বুয়েট থেকে পড়ে আসলে দাম বেশি। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হলে তো কথাই নেই। ভালো পড়াক আর বুঝাক তা কোনো ব্যাপার না সে বুয়েটে পড়ুয়া (বর্তমানের কোচিং সেন্টার এর বড় ভাইগুলো কে উদ্দেশ্য করেই বললাম)।
এবার আসি ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার দের কথায়। সবাই কেন এই দুটো হতে চায়???? আমি মনে করি প্রথমত নিজের পরিবার এটা মাথায় ঢুকায় দ্বিতীয়ত শিক্ষকরা (প্রায় সব শিক্ষকরা)। কারণ হল ডাক্তার হলে আর ইঞ্জিনিয়ার হলে টাকা আর টাকা। সম্মান আর সম্মান। কিন্তু এগুলো ছাড়া আর কিছু কেউ দেখেনা কেন????


শিক্ষক এখন পড়ায় এগুলো হয়ে মাথা উচু করে তোলার জন্য। সাথে তো ফ্যামিলির প্যারা তো আছেই। আর দরিদ্র দেশ না হলে মানুষ কখনই এই পড়ালেখা করে টাকার পিছনে দৌড়াতো না। অন্তত এটা তাকে জন্মগ্রহণের পর থেকে শেখানো হত না যে, শিক্ষা অর্জনের মূল হল টাকা কামানো।.......
আচ্ছা শিক্ষকরা কেন বিজ্ঞানী হতে বলে না???? তারা কেন ওই ডাক্তারদের ভক্ত হয়েই আছে????
যে সকল শিক্ষক বিজ্ঞানীদের ব্যাপারে একটু কম জানেন তাদের আজ ছাত্র হয়ে শিখানোর চেষ্টা করলাম।
একজন বিজ্ঞানী হলে প্রথমে তো PHD নিতে হয়। আর এটা করা যে কতটুকু সম্মানের কাজ তা যারা জানে তারাই বোঝে। আজ আপনি বিজ্ঞানী, আপনাকে অফার করা হবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করার জন্য। আর বিদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করার জন্য মাসিক বেতন কত দেয়া হয় তা একটু কষ্ট করে জেনে নিবেন। আর যদি কোনো কিছু আবিষ্কার করে ফেলতে পারেন তাহলে তো দুনিয়ায় আপনার জয় ধ্বনিতে ভরে যাবে। আপনাকে বিভিন্ন দেশে আমন্ত্রণ জানাবে লেকচার দেয়ার জন্য। সেখাও দেবে মোটা অংকের টাকা। নিজের দেশের নাম উজ্জ্বল হবেই তো হবে সাথে নিজেরে তো পুরো পাংখা অবস্থা।
কিন্তু কেনো শিক্ষকরা এটা বুএ না এটা বোঝায় না? স্যার ডাক্তার হলে আপনার রোগের চিকিৎসা করতে পারে কিন্তু বড় রোগ হলে তা দূর করতে পারে না
স্যার ধরুন আজ আপনার ক্যান্সার হয়েছে। আপনি ২ জন ছাত্রের প্রিয় শিক্ষক। একজন বিজ্ঞানী আরেকজন ডাক্তার। ডাক্তার চিকিৎসা করছে। কিন্তু আপনার মৃত্যু হবে। আপনার আরেক ছাত্র গবেষণা করলো ক্যান্সারকে দমন করার। সফল হল সে ক্যান্সার দমন করতে। আপনি বেচে গেলেন। এবার বলুন, আপনি কি বিজ্ঞানী ছাত্র কে পছন্দ করবেন না? স্যার গবেষণা করেই রোগ মুক্তি সম্ভব। বাংলাদেশের ডাক্তাররা গবেষণার সুযোগ পায় না। আর তার মূল কারণ একটাই আপনারা তাদের মাথায় উলটো টা ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। স্যার আপনারা জাতির মেরুদণ্ড। আপনারাই যদি এক পাক্ষিক মেরুদণ্ড তৈরি করেন তাহলে একদিন এই জাতি আর বিশ্বে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না।
.............................................................................
আজ অনেক ক্ষোভ নিয়ে এই কথাগুলো বললাম। কেউ দু:খ পেয়ে থাকলে ক্ষমা করবেন।
আমরা একটি বিজ্ঞান সংস্থায় কাজ করি। অনেক স্কুলেই যাওয়া হয়। যেখানে আমাদের কাজ সম্পর্কে শুনলে আমাদের বিতাড়িত করে দেয়া হয়। কারণ আমরা বিজ্ঞান প্রচার করি। বই এর ভিতরের বাইরে যে জগৎ আছে তা চেনানোর চেষ্টা করি।
কিন্তু তখন কষ্ট হয় যখন কোনো এক নামি দামী স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন " এগুলোর কোনো ভাত নাই। বই পড়। পড়ালেখা কর বড় হয়ে ডাক্তায় হয়ে টাকা পয়সা কামা। মা বাবার মুখ উজ্জ্বল কর।"
যখন বাংলাদেশের কোনো বিখ্যাত কলেজের প্রিন্সিপাল যিনি পদার্থবিজ্ঞানে PHD করা এবং অধ্যাপক বলেন, "কলেজে কোনো বিজ্ঞান ক্লাবের দরকার নেই(আর চলমান বিজ্ঞান ক্লাব কে বন্ধ করে দেয়)। পড়ালেখা করে পাবলিক এ চান্স পাওয়ার চেষ্টা কর ।"
আর তখন চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করে এই আমাদের শিক্ষক যারা আমাদের দেশের মেরুদণ্ড????? কি হবে এই রকম শিক্ষকদের শিক্ষা নিয়ে যারা নিজেরাই অন্ধকারের মধ্যে।
হায়রে জাতি আমার যে প্রতিভা কে না বুঝে বোঝে মেধা কে।
কোথায় যেয়ে দাঁড়াবে আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ??????

Comments

Popular posts from this blog

Link3 FTP Server

কেন গবেষণা করব?

Arduino Adventures by Floyd Kelly James and Harold Timmis